এক লেখকের বিরাগ – অনুবাদক-  কুমারজিৎ মণ্ডল

“পাণ্ডুলিপি পোড়ানো যায় না”                                                                                                          
কারা যেন বলেছিল!                                                                                                    

কিন্তু তুমি তা জানতে –                                                                                                                               
আত্মাকে ঝলসেছে যে আগুন,
হৃদয় নিংরানো যে যন্ত্রণা,
 ধিকি ধিকি করে জ্বলতে থাকা যে অপমান,
 সব নিভে যাবে একদিন মৌনতার অবগুণ্ঠনে ।

তোমার সময় মানে –
 নিঃসীম অপেক্ষার এক একটা মূহুর্ত,  
  ভয়ার্ত উপেক্ষার এক একটা চাবুক,  
 অশেষ ভীরুতার এক একটা স্তর,
 অনতিক্রম্য বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ।

তোমার সেই সময়কে শ্লথ করে –
 তিরস্কারের ভার,  
আশা-আকাঙ্খার বোঝা,
সত্বাকে কুঁকড়ে দিয়ে নির্মাণ করা  
 যন্ত্রণা আর হতাশার পাঁচিল।

তুমি কেমন করে অতিক্রম করবে
 তোমার সেই সময়কে ?
  কিভাবে খুঁজে পাবে তোমার অবিনশ্বর সত্ত্বার
 জন্য এক টুকরো আশ্রয় ?
যেখানে তুমি স্থিত থাকবে,
 উজিয়ে যাবে না ।

তুমি কিভাবে গোপন রাখবে তোমার অপরিতৃপ্ত ইচ্ছার যন্ত্রণা –
যে ইচ্ছায় ভর করে অন্ধের মতো তার হাত ধরেছিলে  
পেরিয়ে যেতে চেয়েছিলে ওই সুগন্ধী উপত্যকা –
সেই আস্থা খুঁজে পায়নি তোমার প্রশ্নের উত্তর ।
এক বিভ্রমে মুখ ঢাকে নির্মলতা,
নির্মলতা আড়াল করে আরোপিত বিধান ।
অট্টহাসি দেখিয়ে দেয় নিরাময় অযোগ্য ক্ষতচিহ্নগুলি,  
নাটকের উপাদান সাজান হয় শূণ্যতাভরা স্বাভাবিকতায়,
অনুভূতিগুলি হারিয়ে যায় কণ্ঠরোধী গর্বের উন্মাদনায় ।

তোমার কলম থেকে নির্গত হয়েছে যা কিছু –
 তোমার গোচর বা অগোচর,
ঘটিত বা অঘটিত ,
মূর্ত বা বিমূর্ত,
 এখানে বা নেই কোনখানে,  
চিরায়ত বা নশ্বর –
 সবই নিক্ষেপিত হয়েছিল বহ্নিশিখায় ।

কিন্তু সেই দগ্ধ পাণ্ডুলিপি লুপ্ত হয়নি –
জেগে উঠছিল এক নতুন জীবনবোধে,
যাত্রা করেছিল এক নতুন অমরত্বের পথে,
 যেমন জন্ম জন্মান্তরে দেহ থেকে দেহান্তরে
বিন্যস্ত থাকে আত্মার আবর্তন ।

সৃষ্টিকর্তা সতত আহ্বান করেন
যে সৃষ্টিসুখের উৎসবে –  
 ক্লান্ত দৈনন্দিনতার একঘেয়েমি কাটিয়ে
একরাশ স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় সিঞ্চিত হয়ে,
আমরা চলি তাতে যোগ দিতে
পাণ্ডুলিপির নতুন ঠিকানায় ।

* মূল কবিতাঃ Angst of a Writer. কবিঃ সৌম্যনেত্রা মুন্সী। (নীচে মূল কবিতাটি দেওয়া হল)

** অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।


Angst of a writer

Soumyanetra

‘Manuscripts don’t burn’ they say

How could they?

The fire that torments the soul

The pain that wrings the heart

The insults that simmer 

At the edges of the 

Carpet of silence

Every moment of eternal wait

Every slap of cowering indignity

Every shred of monumental fear  

Of never being able to overcome

All that is

And all that will be

Diminutive existence

Burdened with reprimands

Yoke of expectations and delivery 

How will you transcend your times?

How will you find the smallest corner

To not perish?

And be swept away?

How can you not express?

That painful longing for 

Holding that dear hand

Crossing the aromatic valley

Blind-folded with him

The trust that eludes 

The answers you search

The delusion that fogs sanity

The sanity that smacks of imposition  

The laughter that reveals wound

The wound that defies healing

The drama that normality entails

The normality that builds on vacuousness

Emotions that get lost in pride

Pride that ties your tongue…

How all things perceived 

And all things unperceived 

Things that never were

And those that have been

Here and nowhere

Forever and not for once

Have flown through your pen

And then got charred and bruised

And burned down 

Others with them

But have still survived

Thrived and grown

Like souls changing worn out bodies

Lives after lives

Immortality and imperishability

Have kissed them deep

Sifting through banalities 

Of the mundane and the routine

Celebrating the creation 

Of the creator

In the eternal festival 

Where all of us are invited

In the abundance of hopes

And bounty of dreams

We carry on.

যে মক্কায় আমি যেতে চাই না – অনুবাদক- কুমারজিৎ মণ্ডল

তুমিই তো সেই মক্কা –

তোমার কথা ভাবলেই    
শয়ণে স্বপ্নে 
আমার চেতনা ছন্দহীন   
হয়ে পড়ে।
তোমার কথা মনে পড়লেই
আগামী দিনের জন্য
প্রেম আর আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে
 রাখতে ইচ্ছা হয়।

তোমার ভাবনায় মিশে যেতে যেতে  
 আমি ঘুমের দেশে তলিয়ে যাই,
পৌঁছে যাই অচেনা উপত্যকায়-
সেখানে জলে আমি সাঁতার কাটতে পারিনা –
শুধু জলকেলি করি।

যত তোমার কাছে যেতে চাই –
তত আবার দূরে চলে যেতে চাই।
যত তোমাকে আমার স্বপ্ন থেকে ঝেড়ে ফেলতে
 চাই –  
ততই আবার তোমাকে জড়িয়ে ধরতে চাই।
 তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও
বলতে ইচ্ছা করে না।

তুমি সেই কুহেলিকা –
তোমাতে ডুব দিয়ে
তোমার ঘ্রাণ আমার অবচেতনায়
ধীর লয়ে মিশিয়ে নিয়ে
 লীন হয়ে যেতে চাই ।

তোমার গোপনীয়তায় আমার তৃপ্তি খোঁজা,
তোমার চিন্তায় আমার বিচরণ ।
তোমাকে ছাড়িয়ে অনেক দূরে
চাঁদের ভেলায় চড়ে
 কোন এক স্বপ্নপুরে
সংগোপনে
রাত্রির নিস্তব্ধ অভিসারে
হারিয়ে যাওয়ায় আমার আনন্দ ।
কিন্তু তারপর –
তারপর আবার ফিরে আসতে চাই
আপন ঠিকানায় ।

তাই মক্কা,
আমি আর তোমার কাছে
যেতে চাই না।                                                                                                                                                            

* মূল কবিতা : You are Mecca I never want to visit.  কবি : সৌম্যনেত্রা মুন্সী। (নীচে মূল কবিতাটি দেওয়া হল।)

** অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।


You’re the Mecca I never want to visit

Soumyanetra

You’re the Mecca I think about when 

Consciousness tip toes on the border 

Of my slumber and my dreams,

Lightly stroking the hopes and pleasures

Of the day that lay ahead 

You’re the Mecca I think about

When I want to fall asleep

And gradually slide down that valley

I’ve never been to

And surf the waters that I can’t swim

The more I want to go near you

The more I don’t want to

The more I wish to put you out of my dreams

The more I wish to cling on to you

The more I wish to talk to you

The more I wish not to 

You are the enigma I want to bathe in

The aroma I want to inhale

But slowly 

So slowly that it’s almost subconscious

I want to snuggle in your secrets 

And wander in your thoughts

And want to keep you that much far from me

So that the full moon can row me 

Across the night 

And across adventures

And across tranquility

In the ocean of dreams

And put me safely back 

You’re the Mecca I never want to visit.